সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস)
বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক
জোটের
বিমান
হামলায়
‘নিহত’
বাংলাদেশি সাইফুল
হক
ওরফে
সুজন
দেশটিতে আইএসের
একজন
ব্রিটিশ তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। জুনাইদ হুসেন
নামের
এই
ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞ গত
আগস্টে
সিরিয়ায় এক
ড্রোন
হামলায়
নিহত
হলে
সাইফুল
তাঁর
দায়িত্ব গ্রহণ
করেন। জুনাইদ
ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থান
থেকে
ইরাক
ও
সিরিয়ায় আইএসের
যোদ্ধা
আকৃষ্ট
করা
কর্মসূচির উদ্যোক্তা। আর সাইফুল
সম্পর্কে ভূয়সী
প্রশংসা করেছেন
যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী তাঁর
বন্ধুবান্ধব ও
সহকর্মীরা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর
দপ্তর
পেন্টাগনের ভাষ্য
অনুযায়ী, গত
১০
ডিসেম্বর আইএসের
কথিত
রাজধানী সিরিয়ার রাকা
প্রদেশের কাছে
বিমান
হামলায়
বাংলাদেশি সাইফুল
নিহত
হন। তাঁকে
এই
গোষ্ঠীর একজন
জ্যেষ্ঠ নেতা
হিসেবেও আখ্যা
দিয়েছে
পেন্টাগন। সিরিয়া ও
ইরাকে
বিমান
হামলায়
নিহত
আইএসের
যে
১০
গুরুত্বপূর্ণ নেতার
তালিকা
গত
মঙ্গলবার মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট
প্রকাশ
করেছে
তাতে
সাইফুলের নাম
রয়েছে। এই
গোষ্ঠীর হয়ে
বহির্বিশ্বের সঙ্গে
যোগাযোগের পরিকল্পনাকারী, হ্যাকিং কর্মকাণ্ড, নজরদারি প্রতিরোধ প্রযুক্তি ও
অস্ত্র
উন্নয়নের কাজে
নিয়োজিত ছিলেন
তিনি। প্রভাবশালী ব্রিটিশ দৈনিক
ডেইলি
মিরর
গত
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক
খবরে
বলেছে,
সাইফুল
হক
সিরিয়ায় আবু
খালিদ
আল-বাঙালি নামে পরিচিত
হন। সেখানে
ব্রিটিশ নাগরিক
ও
আইএসের
হ্যাকিং কর্মকাণ্ডের নেতৃত্বদানকারী জুনায়েদ হুসেনের অধীনে
কাজ
শুরু
করেন। গত
২৪
আগস্ট
এক
ড্রোন
(চালকবিহীন বিমান)
হামলায়
নিহত
হন
জুনায়েদ। এরপর তাঁর
স্থলাভিষিক্ত হন
সাইফুল। পত্রিকাটির খবরে
আরও
বলা
হয়,
রাকায়
নিহত
হওয়ার
দেড়
বছরের
কম
সময়
আগে
যুক্তরাজ্যের কার্ডিফের নিজের
বাসা
ছেড়ে
সিরিয়া
যান
সাইফুল। এরও
আগে
২০০৩
সালে
তিনি
লেখাপড়ার জন্য
লন্ডনে
যান
এবং
গ্লামারগান বিশ্ববিদ্যালয়ে (বর্তমানে সাউথ
ওয়েলস
বিশ্ববিদ্যালয়) পড়াশোনা করেন। কম্পিউটার প্রকৌশলী হয়ে
ওয়েলসের কার্ডিফে গিয়ে
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গড়ে
তোলেন। যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য
২০১৪
সালে
বিশেষ
ভিসার
আবেদন
করে
ব্যর্থ
হন
সাইফুল
হক। এরপর
বাংলাদেশে চলে
আসেন
তিনি। সেখান
থেকে
পরে
সিরিয়া
যান। সাইফুলের নিহত
হওয়ার
খবরে
কার্ডিফে বসবাসকারী তাঁর
বন্ধুবান্ধব গভীর
দুঃখপ্রকাশ করে
বলেছেন,
তিনি
কখনোই
উগ্র
মনোভাব
দেখাননি। সাইফুলের একজন
ব্যবসায়িক সহকর্মী কথায়,
‘তিনি
প্রত্যেককে তাঁদের
ব্যবসার জন্য
ওয়েবসাইট তৈরিতে
সহায়তা
করতেন। সব
সময়ই
নতুন
ধারণা
দিতেন।’ ‘সাইফুল
মানুষকে সহায়তা
করতে
ভালোবাসতেন; সবার
সঙ্গে
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে
তুলতেন। তাঁদের
ধর্ম
বা
সংস্কৃতি তাঁর
কাছে
কোনো
ব্যাপার ছিল
না’—বলেন ওই সহকর্মী। তাঁকে চিন্তাশীল, নিষ্ঠাবান, দায়িত্বপরায়ণ ও
কঠোর
পরিশ্রমী বলে
আখ্যায়িত করেন
আরেকজন
সহকর্মী। সাইফুলের পরিচিত
আরেকজন
বলেন,
‘তিনি
ছিলেন
ভদ্র
ও
খুবই
বিনয়ী।’ বড়
ভাইয়ের
স্ত্রী
মারা
যাওয়ার
পর
তিনি
ক্রমেই
ধর্মভীরু হয়ে
উঠতে
থাকেন
এবং
তাঁর
শিশুপুত্রকে লালনপালনের জন্য
যুক্তরাজ্য নিয়ে
আসেন
সাইফুল। সহকর্মী ও
বন্ধুবান্ধবেরা জানান,
২০১৪
সালে
সাইফুল
যুক্তরাজ্য ছেড়ে
যাওয়ার
আগে
বলেছিলেন, তিনি
সপরিবারে বাংলাদেশে ফিরে
যাচ্ছেন।