কৌশলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল মেয়েটির সঙ্গে আরিফুল ইসলাম সুবজ (৩২) নামের এক যুবক। স্ত্রী থাকলেও নিজের পরিচয় দিয়েছিল অবিবাহিত হিসেবে। ঈদের সময় স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল সে। এরপর তাকে ডেকে নিয়ে যায় নিজ বাসায়। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিল দুই বন্ধু কামাল ও রাশেদুল। মেয়েটি বাসায় গিয়েই জানতে পারে তার প্রেমিক সবুজ বিবাহিত। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে চলে আসতে উদ্যত হয়। কিন্তু দুই বন্ধু মিলে প্রেমিক বাধা দেয় তাকে। ধর্ষণও করে একাধিকবার। আর ধর্ষণের এ দৃশ্য ভিডিও করে দুই বন্ধু। বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ও দেখায়। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে খোদ রাজধানীর ভাটারা এলাকায়। আজ দুপুরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে ধর্ষক সবুজ ভাটারা থানার সোর্স হওয়ায় হাসপাতালে এসে এক পুলিশ সদস্য তাদের শাসিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ভাটারা থানায় কোন মামলা হয়নি।
সূত্র জানায়, ভাটারা থানা পুলিশের সোর্স ও এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত আরিফুল ইসলাম সবুজ মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা। তার বাবার নাম গিয়াস উদ্দিন। বর্তমানে সে রাজধানীর কুড়িল এলাকার পানির পাম্পের পাশে সস্ত্রীক বসবাস করে। নিজের স্ত্রীর কথা গোপন করে কৌশলে তিতুমীর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। ঈদের ছুটিতে সবুজ তার স্ত্রীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এ সুযোগে মঙ্গলবার দুপুরে হোস্টেল থেকে ওই ছাত্রীকে পটিয়ে বাসায় নিয়ে আসে। এ সময় সবুজের অপর দুই সহযোগী কালাম ও রাশেদুল ওই বাসায় উপস্থিত ছিল। ধর্ষিতা বাসায় যাওয়ার পর জানতে পারে তার কথিত প্রেমিক সবুজের স্ত্রী রয়েছে। ঈদের ছুটিতে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে কৌশলে তাকে বাসায় ডেকে এনেছে। এ কথা জানার পর সে ওই বাসা থেকে চলে আসতে চায়। এ সময় সবুজ ও তার অপর দুই সহযোগী কামাল এবং রাশেদুল বাধা দেয়। তাকে আটকে রেখে সবুজ রাতভর একাধিকবার ধর্ষণ করে। কামাল ও রাশেদুল ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ধারণ করে। ধর্ষণে বাধা দিলে তাকে বেধড়ক মারপিট করে তারা। এ ঘটনা জানাজানি হলে ধারণ করা ভিডিও ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটে ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়। ধর্ষিতা কলেজছাত্রী জানায়, পড়াশোনার জন্য সে মহাখালীর একটি ছাত্রী হোস্টেলে থাকে। ছয় মাস আগে সবুজের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। ধর্ষিত হওয়ার পর ওই ছাত্রী তার এক আত্মীয়কে বিষয়টি জানায়। পরে সেই আত্মীয় তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যান। নির্যাতিতা ওই তরুণীর স্বজন জানান, মেয়েটি এখন অ্যাবনরমাল। তবে এর বেশি কিছু তিনি বলতে চাননি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর ডা. বিলকিস বেগম বলেন, ভিকটিম দুপুর আড়াইটার পর হাসপাতালে আসায় পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তবে সব আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামীকাল রিপোর্ট দেয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, ভিকটিম জানিয়েছে মেয়েটির কথিত প্রেমিক তার স্ত্রী থাকার কথা গোপন করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। পরে কৌশলে বাসায় নিয়ে গিয়ে তিনবার ধর্ষণ করে। ভিডিওচিত্র ধারণ করে এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। তাকে মারধর করা হয়েছে বলেও ভিকটিম তাকে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে ভাটারা থানার ডিউটি অফিসার এসআই কবির হোসেন রাত ৮টার দিকে জানান, এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ঘটনা জানার পর থানার এসআই নজরুল ইসলাম বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গেছেন। তিনি ফিরলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।