শুক্রবার, ২ অক্টোবর, ২০১৫

সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শুনানো হয়েছে। অন্যদিকে কাশিমপুর কারাগারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়েছে।
সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির জানান, মুজাহিদ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকলেও সাকা চৌধুরী আছেন কাশিমপুর কারাগারে। সে কারণে মুজাহিদকে পরোয়ানা শোনানো হয় এবং সাকারটি কাশিমপুরে পাঠানো হয়েছে।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছার পর সাকা চৌধুরীকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়েছে বলে জানান জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই দুই নেতার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এরপর বিকেলে লাল কাপড়ে মোড়া মৃত্যু পরোয়ানার কপি নিয়ে ট্রাইব্যুনালের ছয়জন প্রতিনিধি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন। আধ ঘণ্টার মধ্যে মুজাহিদের পরোয়ানা তাকে পড়ে শোনানো হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বুধবার দুপুরে তাদের ফাঁসির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করে।
ফাঁসির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের ফলে বিধি অনুযায়ী তারা রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য ১৫ দিন সময় পাবেন।
২০১৫ সালের ২৯ জুলাই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখে। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আর ২০১৫ সালের ১৬ জুন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের একই আপিল বেঞ্চ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখে।
এর আগে ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ড রায়ের বিরুদ্ধে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং ১১ আগস্ট আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ খালাস চেয়ে আপিল করেন।
২০১৩ সালের ১ অক্টোবর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে এবং ১৭ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করে।
হরতালে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের একটি মামলায় ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে। পরে ১৯ ডিসেম্বর তাকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের ২৩টি অভিযোগে ২০১৩ সালের ৪ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্যদিয়ে তার বিচারকাজ শুরু হয়।
অন্যদিকে, ২০১০ সালের ২৯ জুন আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।