নাটোরে প্রেমিকের হাতে ট্রেন ও হোটেলে ধর্ষনের শিকার এক মাদরাসা ছাত্রীকে রেল স্টেশন থেকে উদ্ধার করে শনিবার রাত একটার দিকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার দিনভর এ বিষয়ে মামলা করার জন্য নাটোর ও সিংড়া থানায় ঘুরেও মামলা করতে পারেনি ঐ ছাত্রীর পিতা।
পুলিশ ও নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ডাকমনিকা গ্রামের রণবাঘা মাদরাসার ৬ষ্টশ্রেণীর এক ছাত্রী (১৪) শনিবার সকালে তার প্রেমিক নাটোরের সিংড়া উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের আয়েন উদ্দিনের ছেলে যুবক রিপনের সাথে বেড়াতে বের হয়। রিপন প্রথমে তাকে বেড়ানোর কথা বলে বগুড়ার সান্তাহারের একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষন করে। রিপন সেখান থেকে রাতে ঐ ছাত্রীকে রাজশাহী গামী আন্তনগর ট্রেন তিতুমীর এক্্রপেসে তোলে। রাতের চলন্ত ট্রেনে অন্য যাত্রীরা ঘুমিয়ে পড়লে একটু ফাঁকা জায়গায় নিয়ে সেখানেও ভয় দেখিয়ে তার ওপর চালায় যৌন নির্যাতন। এতে ঐ ছাত্রীর শারিরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি শুরু হলে শনিবার রাত ১টার দিকে প্রতারক প্রেমিক রিপন ছাত্রীটিকে নাটোর স্টেশনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নাটোর ষ্টেশন থেকে উদ্ধার করে তাকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। রোববার সকালে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্সি শাহাবুদ্দীন হাসপাতালে গিয়ে ধর্ষিতার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। পরে ঐ ছাত্রীর পিতা আবুল হোসেন এ ব্যাপারে মামলা করতে গেলে ঘটনাস্থল নিজেদের থানা এলাকা নয় বলে মামলা না নিয়ে তাকে ফিরিয়ে দেয় নাটোর ও সিংড়া থানা পুলিশ।
নাটোর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, ভর্তিকৃত ছাত্রীর শারিরিক পরীক্ষায় প্রাথমিক ভাবে ধর্ষনের এবং জোর জবরদস্তির আলামত পাওয়া গেছে। বয়স কম হওয়ায় সে বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্সি শাহাবুদ্দীন সাংবাদিকদের জানান, ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের খবর দেয়া হয়েছে তারা ইতোমধ্যেই নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে এসে পৌছেছেন। ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় নাটোর থানায় মামলা দায়ের করলে ধর্ষক রিপনকে আটকের সব ধরনের চেষ্টা করা হবে।
মামলা না নিয়ে ধর্ষিতা ছাত্রীর বাবাকে নাটোর ও সিংড়া থানা পুলিশ ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী নয়া দিগন্তকে বলেন, অন্য কোন কারণ নয়, দোষী ব্যক্তির সঠিক বিচারের স্বার্থেই প্রকৃত ঘটনাস্থল সান্তাহারে মামলা দায়ের করা উচিত। সেখানে মামলা হলেই পুলিশ সঠিক ভাবে তদন্ত করে ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে সহযোগীতা করতে পারবে।