পাবনার আতাইকুলায় গরু চোর সন্দেহে গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে দু’জন নিহত
হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। শনিবার ভোর চারটার দিকে আতাইকুলা
থানার সড়াডাঙ্গি তাজিয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত তিনজনকে পাবনা জেনারেল
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে ক্ষুব্ধ
গ্রামবাসীর ছোঁড়া ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন আব্দুল বারেক নামের পুলিশ
কনস্টেবল। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নিহত দুইজনের মধ্যে একজনের নাম পরিচয়
জানা গেছে। তিনি হলেন-নাটোরের সিংড়া উপজেলার বেলতা প্রামানিকের ছেলে শহিদুল
ইসলাম (৩০)। অপরজনের নাম এখনও জানা যায়নি। আহতরা হলেন- নাটোরের সিংড়া
উপজেলার ইয়ারুল ইসলাম, দিনাজপুরের ফরমান আলী ও নওগাঁর বাবলু হোসেন। আহত
পুলিশ সদস্য আব্দুল বারেক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আতাইকুলা থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর-এ-আলম জানান, ভোরে সংঘবদ্ধ একটি চোরের দল
আতাইকুলার সড়াডাঙ্গি তাজিয়াপাড়া গ্রামের আবুল কালামের গোয়াল ঘর থেকে ৪/৫টি
গরু চুরি করে। বিষয়টি বাড়ির লোকজন টের পেয়ে দ্রæত সড়াডাঙ্গি, গঙ্গারামপুর ও
কাছারপুর মসজিদে মাইকিং করলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে। এ সময় সংঘবদ্ধ চোরের দল
অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রæত পালিয়ে যাবার সময় সড়াডাঙ্গি মহাসড়ক সংলগ্ন জোলার
বাগানের কাছে তিনজনকে ধরে গণপিটুনী দেয় গ্রামবাসী। এতে ঘটনাস্থলেই দু’জনের
মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে একজন ও পরে একটি ধানক্ষেতে পালিয়ে থাকা আরও
দু’জনকে আহত অবস্থায় আটক করে পুলিশ। খবর পেয়ে পুলিশ সকাল সাতটার দিকে
ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী
পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ কনষ্টেবল আব্দুল
বারেক মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর নিহত দুইজনের
লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায় পাবনা পুলিশ সুপার
আলমগীর কবির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার (বিশেষ শাখা) মো: সিদ্দিকুর রহমান জানান, ওই এলাকায় মাঝেমধ্যেই গরু
চুরি হচ্ছিল। একটি সংঘবদ্ধ চোরের দল এ চুরির ঘটনার সাথে জড়িত। বিভিন্ন
এলাকা থেকে চোরের দল শনিবার ভোরে সেখানে গরু চুরি করতে গেলে গ্রামবাসীর
জনরোষের শিকার হয় তারা। হতাহতরা আন্ত:জেলা চোর চক্রের সদস্য বলেও দাবি
পুলিশের।