বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বাগেরহাটে চীনা যুবক-যুবতী আটক : আদালতের আদেশে জেল হাজতে


হুয়াং গুয়াংজিং পুটিং নামের এক সুদর্শন যুবক আর জিয়ান হং লিউ নামের এক সুন্দরী যুবতী। এদের দু’জনেরই বয়স ৩০ এর কোটায়। তারা চীনা নাগরিক। গত পাঁচ মাস আগে পর্যটক ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন তারা। ব্যাপারটা এখানেই থেমে থাকেনি । পর্যটক হিসাবে আসলেও, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে-ফিরে অবৈধ ভাবে তারা মোবাইল ফোন সেট বিক্রি করছিলো। কিন্তু সেখানেও ছিলো প্রতারণা। নামি ব্রান্ডের মোবাইল সেট নকল বানিয়ে সস্তায় বিক্রি করছিলেন তারা। আর তা কিনেই প্রতারণার শিকার হয়েছেন হাজারো সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে এ সব মোবাইল সেটসহ হুয়াং গুয়াংজিং পুটিং ও জিয়ান হং লিউকে গ্রেফতার করেছে মংলা থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। বুধবার সকালে তাদের আদালতে সোপর্দ্দ করা হয়েছে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মংলা থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ পর্যটক ভিসা নিয়ে চায়না থেকে বাংলাদেশে এসেছেন তারা। এরপর গত সোমবার তারা খুলনা হয়ে মংলায় আসেন। ওই দুই বিদেশী সুন্দর চেহারার অধিকারী ও সুন্দর করে বাংলা বলতে পারেন। আর বাংলা কথা দিয়েই প্রথমে সবাইকে আকৃষ্ট করে বোকা বানায় তারা। এরপর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামি-দামি মোবাইল সস্তায় বিক্রি করেন তারা। সাধারণ মানুষও হুজুগে কিনতে থাকে। সারাদিন বিক্রি শেষে রাতেই খুলনায় চলে যান তারা। সেখানে রাত্রি যাপন করে মঙ্গলবার আবার তারা মংলায় ফিরে আসে। এদিকে একদিন যেতে না যেতেই তাদের বিক্রি করা পূর্বের মোবাইলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ রকম কয়েকটি মোবাইল মঙ্গলবার ক্রেতারা তাদের (বিদেশীদের) কাছে নিয়ে আসে। কিন্তু তারা ওই মোবাইল বিক্রি করেছে বলে অস্বীকার করে। এ নিয়ে হট্টোগোল হয়। এক পর্যায় পুলিশ গিয়ে শহরের মেইন সড়ক থেকে তাদের আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাসপোর্টসহ বিভিন্ন ব্যান্ডের ৩৮টি মোবাইল জব্দ করেছে পুলিশ। ওই সব মোবাইল ক্রেতাদের দাবী, ওই মোবাইল সেটগুলোর উপরে আইফোনসহ বিভিন্ন নামি-দামি ব্রান্ডের স্টিকার সাটানো থাকলেও, ভিতরে চায়না ও সস্তা দুর্বল পার্টস বসানো। সাধারণ মানুষ ব্রান্ড দেখে সস্তা কিনে নেয়। আর প্রতারিত হয়। মংলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বেলায়েত হোসেন বুধবার বিকাল ৪টায় এ প্রতিবেদককে বলেন, বিদেশীরা ভয়ংকর প্রতারক। তারা দোভাষী হলেও গ্রেফতারের পরে তারা চায়না ছাড়া আর কোন ভাষা জানে না বলে ভান করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫বি(১)(বি) ধারায় মামলা দায়েরের পর বুধবার আদালতে সোপর্দ্দ করা হয়েছে। আদালতের নির্দ্দেশে তাদের বাগেরহাট জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ চক্রের অনেক সদস্য এখনো বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণা করে বেড়াচ্ছে বলে পুলিশের ধারণা বলে জানান তিনি।