রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৫

যে খবরে ভারতীয় গণমাধ্যমে তোলপাড়

শিনা বোরা, ভারতে মুম্বাইভিত্তিক আইএনএক্স মিডিয়ার সাবেক নির্বাহী ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে। চলন্ত গাড়িতে ইন্দ্রানীই তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বলে অভিযোগ। সঙ্গে ছিলেন তার সাবেক স্বামী সঞ্জিব খান্না। হত্যার পর শিনার দেহ পুড়িয়ে ফেলা হয় যাতে তারা 'নিরাপদ' থাকতে পারেন। শিনাকে সবসময় নিজের বোন বলে পরিচয় দিতেন ইন্দ্রানী। বন্ধু-বান্ধব খোঁজ করলে ইন্দ্রানী বলতেন, 'শিনা পড়াশোনার জন্য বিদেশ গেছে'।
প্রায় তিন বছর আগের ঘটনাটি নিয়ে এখন ভারতীয় গণমাধ্যমে তোলপাড়। আর ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায় এখন ভারতের মিডিয়া প্রতিষ্ঠান স্টার ইন্ডিয়ার সাবেক সিইও পিটার মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী। কাগজে-কলমে এখন পর্যন্ত ইন্দ্রানীর তিনটি বিয়ের খবর পাওয়া গেছে।
 
সম্প্রতি ওই খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেন ইন্দ্রানীর সেই সময়কার গাড়িচালক শ্যাম রাই। শিনা খুন হওয়ার পর যে গ্রামে তার দেহ পুড়িয়ে ফেলা হয় সেই স্থানটি চিহ্নিত করেন শ্যাম রাই। গত ২১ আগস্ট অস্ত্র আইনে শ্যাম গ্রেফতার হওয়ার পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইন্দ্রানীকে গ্রেফতার করে মুম্বাই পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শিনা হত্যায় জাড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন ইন্দ্রানী। আরো জানান, শিনা তার মেয়ে, বোন নন।  
 
এরপরও শিনা হত্যাকাণ্ডের আসল কারণ জানা যাচ্ছে না; প্রতিদিন বেড়িয়ে আসছে নতুন তথ্য। এরকম তথ্যের সর্বশেষটি হলো, শিনার সঙ্গে তার মায়ের বর্তমান স্বামী পিটার মুখোপাধ্যায়ের আগের স্ত্রীর ছেলে রাহুলের প্রেম ছিল। সামাজিক সম্পর্কের হিসেবে তারা সৎ ভাই-বোন। বিষয়টি ইন্দ্রানীর পছন্দ না হওয়ায় মেয়েকে হত্যা করেন তিনি।
 
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুসারে 'হত্যার সময় অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন শিনা। আর সেকথা মা ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন তিনি।
 
২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল শিনাকে হত্যা করা হয়। ইন্দ্রানীর গাড়িচালক শ্যাম রাই যে স্থানটি চিহ্নিত করেছিলেন সেখান থেকেই শিনা হত্যার মাস খানেক পর তার দেহাবশেষ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়ের হলেও তা বেশি দূর এগোয়নি। এখন পর্যন্ত শিনা হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সিদ্ধান্তে আসা না গেলেও সৎ ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ককেই মূল কারণ মনে করছেন অনেকে। তবে মুম্বাই পুলিশের মতে, শিনা হত্যার কারণ অন্য।
 
২০০২ সালে পিটার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই তাকে বিয়ে করেন ইন্দ্রানী। কয়েক বছর পর স্টার ছেড়ে সিঙ্গাপুরের একটি সংস্থার অংশিদারিত্বে তৈরি করেন আইএনএক্স মিডিয়া গ্রুপ। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুই বছরের মধ্যেই আইএনএক্স ছাড়তে হয় তাদের। আত্মসাতের সেই অর্থের একটি বড় অংশ শিনার নামে জমা ছিল বলে ধারণা করছে পুলিশ। সম্ভবত শিনার নামে জমা করা সেই টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করায় শিনাকে হত্যা করা হয় বলে মনে করছে তারা।