কিশোরগঞ্জের
শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ
জামাতের মাঠের
কাছে আজ
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে
সন্ত্রাসীরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটালে পুলিশের
সাথে তাদের
গুলি বিনিময়ের
ঘটনা ঘটেছে। এতে
দুই পুলিশসহ
অত্যন্ত চারজনের
নিহত হওয়ার
খবর এখন
পর্যন্ত পাওয়া
গেছে।
আহত হয়েছেন
প্রায় ১২
জন।
তাঁদের মধ্যে
বেশির ভাগই
পুলিশ।
এ ঘটনায়
দুজনকে আটক
করা হয়েছে
বলেও জানা
গেছে।
কিশোরগঞ্জের
অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার সৈয়দ
আবু সায়েম
সকালে বলেন,
নিহত দুজন
পুলিশই কনস্টেবল।
তাদের নাম
জহিরুল হক
(৩৫) ও
আনসারুল (৪০)। নিহত
হওয়া অপর
দু’জনের
পরিচয় জানা
যায়নি। এদের
একজন হামলাকারী
হতে পারে
বলে তাঁরা
ধারণা করছেন।
অপরজন একজন
নারী।
র্যাব ১৪
ভৈরব ক্যাম্প
সূত্র বলছে,
ঘটনাস্থলে ঝর্ণা রানি ভৌমিক নামে
এক নারী
নিহত হয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি গুলিবিদ্ধ
হয়ে নিহত
হন। আহত
পুলিশ সদস্য
আনসারুল্লাহ ময়মনসিংহ মেডিকেলে নেওয়ার পথে
মারা যান।
হামলাস্থল
থেকে চাপাতি
ও বোমাসদৃশ
বিস্ফোরক উদ্ধার
করা হয়েছে।
এ ছাড়া
গুলিসহ একটি
রিভলবার উদ্ধার
করা হয়েছে।
পুলিশ
ও প্রত্যক্ষদর্শীরা
বলছে, সকাল
নয়টার দিকে
মুসল্লিরা যখন নামাজ আদায়ের জন্য
শোলাকিয়া ঈদ
জামায়াতের মাঠে যাচ্ছিলেন তখন আজিমউদ্দীন
স্কুল সংলগ্ন
মুফতি মোহাম্মদ
আলী মসজিদের
সামনে দাঁড়িয়ে
থাকা টহল
পুলিশের একটি
দলের ওপর
বোমা হামলা
চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা এ সময়
চাপাতি হাতে
কয়েকজন যুবককে
দৌড়াদৌড়ি করতে
দেখে। তাঁরা
চাপাতি দিয়ে
পুলিশের ওপরও
হামলা চালায়।
দুর্বৃত্তরা
আকস্মিকভাবে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য
করে বোমা
বিস্ফোরণ ঘটায়।
দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করতে পুলিশ পাল্টা
গুলি ছুড়লে
দু’পক্ষের
মধ্যে সংঘর্ষ
শুরু হয়।
এতে এক
পুলিশ সদস্য
নিহত হন।
এবং গুরুতর
আহত হয়
আরও বেশ
কয়েকজন পুলিশ
সদস্যসহ মুসল্লি।
এই
হামলার ঘটনায়
শোলাকিয়া ময়দানে
থাকা মুসল্লিদের
মধ্যে আতঙ্ক
ছড়িয়ে পড়ে।
পরে অত্যন্ত
আতংকজনক পরিস্থিতিতে
ঈদের জামাত
অনুষ্ঠিত হয়।
মোনাজাত অত্যন্ত
সংক্ষিপ্ত করে দ্রুত নামাজ শেষ
করে দেয়া
হয়।
এর
আগে সকাল
৯টার দিকে
শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে ইমামতি করতে
স্থানীয় সার্কিট
হাউসে পৌঁছান
আল্লামা ফরিদ
উদ্দীন মাসঊদ।
ঈদগাহর পথে
যাওয়ার জন্য
প্রস্তুতি নেয়ার সময়ই খবর আসে
ঈদগাহর প্রবেশপথে
বোমাহামলা হয়েছে। এতে প্রশাসনের পক্ষ
থেকে তাকে
সেখানে যাওয়ার
অনুমতি দেয়া
হয়নি। প্রধান
ইমামের অনুপস্থিতিতে
আর একজন
ইমাম ঈদের
নামাজে ইমামতি
করেন।
পুলিশ
শোলাকিয়া মাঠে
যাওয়ার প্রধান
রাস্তা স্টেশন
রোড, গৌরাঙ্গবাজারের
আশপাশের সব
রাস্তা বন্ধ
করে দিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে,
হামলার পরে
পাঁচ থেকে
ছয়জন হামলাকারী
আজিমউদ্দীন স্কুলের আশপাশের বাড়িতে ঢুকে
পুলিশের ওপর
গুলিও চালায়।
এ সময়
পুলিশও পাল্টা
অবস্থান নিয়ে
গুলি করে।
দুপুরে পুলিশ,
র্যাব
ও বিজিবি
মিলে এলাকাটি
ঘিরে আজিমউদ্দীন
স্কুলসহ আশপাশের
বাসাবাড়িতে তল্লাশি চালায়। এ সময়
শোলাকিয়া ঈদগাহ
সংলগ্ন একটি
বাসা থেকে
সন্দেহভাজন একজনকে আটক করে পুলিশ।
মামুন নামে
আরেক সন্দেহভাজনকে
শোলাকিয়া মাঠের
পাশ থেকে
আটক করা
হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাবাহিনীর পাহারায় ওই মাঠ থেকে
মুসল্লিদের বের করে দেয়া হয়।
বেলা একটার
দিকে পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রণে নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনাস্থল
ঘিরে রেখেছে
পুলিশ।
ময়মনসিংহের
অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার ডিএসবি
মো. নূরে
আলম জানান,
শোলাকিয়ায় আহত সাত পুলিশ সদস্যকে
প্রথমে ময়মনসিংহ
মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে
তাদের অবস্থার
অবনতি হলে
ময়মনসিংহ সম্মিলিত
সামরিক হাসপাতালে
স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন
অবস্থায় আনসারুলের
মৃত্যু হয়।
ময়মনসিংহ
মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির
উদ্দিন আহমেদ
বলেন, সেখানে
চিকিৎসাধীন হামলায় আহত ছয়জন পুলিশকে
হেলিকপ্টারে করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক
হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হয়েছে। তাঁরা
স্প্লিন্টারে আহত। তাঁদের অবস্থা গুরুতর।
কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকেও আহত
দুই পুলিশ
সদস্যকে হেলিকপ্টারে
করে ঢাকার
সিএমএইচে নেওয়া
হয়েছে। বাকিরা
কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
১
জুলাই রাতে
ঢাকার গুলশানের
হলি আর্টিজান
রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ি
স্বীকার করেছিল
তথাকথিত আইএস।
গুলশানের হামলার
আতঙ্ক কাটতে
না কাটতেই
আবারও হামলার
ঘটনা ঘটল।
শোলাকিয়া মাঠে
হামলার দায়
এখন পর্যন্ত
কোন সংগঠন
স্বীকার করেনি।