আর কত নিচে নামবে মানুষ
নামধারী পশুরা! সমাজে চোখে যারা ভদ্র মানুষ বলে পরিচিত, সমাদৃত!
আজ তারাই ধর্ষণের মত ন্যক্করজনক কাজে সহায়তা করছে! চূড়ান্ত এই নৈতিক স্খলনের একটি ঘটনা ঘটেছে এবার চট্টগ্রামে ।
মাল্টিপারপাসের ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় যুবলীগ নেতার
সহায়তায় এক দরিদ্র গৃহবধূ গণধর্ষণের
শিকার হয়েছেন।
যুবলীগ নেতা অ্যাডভোকেট বাহাদুরের (৩৫) সহায়তায় ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ
করেছে মাল্টিপারপাসের পরিচালক নূর মোহাম্মদ (৩৫) ও ছাব্বির প্রকাশ
ছাগের (৩৬)।
বৃহস্পতিবার
গভীর রাতে নগরীর বাকলিয়া
থানার কল্পলোক আবাসিক এলাকায় খালপাড়ে
ক্ষুদ্র ঋণদানকারী ওই প্রতিষ্ঠানের
অফিসে এ গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার
একদিন পর শুক্রবার রাতে ওই নারী বাদি হয়ে বাকলিয়া থানায় চারজনকে আসামি করে একটি
মামলা দায়ের করেছেন।
আসামিরা
হলো- নূর মোহাম্মদ (৩৫), ছাব্বির প্রকাশ ছাগের (৩৬),
রাসেল (২৫) এবং মো. বাহাদুর ওরফে
অ্যাডভোকেট বাহাদুর (৩৫)। শনিবার ধর্ষক বাহাদুর ও নুর মোহাম্মদকে গ্রেফতার
করেছে পুলিশ।
পুলিশ
জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শেষ
সপ্তাহে ধর্ষিতা তরুণীর স্বামী নূর
মোহাম্মদের প্রতিষ্ঠান থেকে সুদে তিন
হাজার টাকা ঋণ নেন। প্রথম দুই কিস্তির
টাকা তিনি ঠিকভাবে পরিশোধ করেন।
আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে পরবর্তী
কিস্তির টাকা আর পরিশোধ করতে পারেননি।
টাকা আদায়ের জন্য বাকলিয়ার আবদুল লতিফ
হাট এলাকায় আবদুন নূর কলোনিতে ১৮
বছর বয়সী ওই গৃহবধূর বাসায় গিয়ে তাকে
এবং তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়
ছাব্বির এবং রাসেল। তাদের কল্পলোক
আবাসিক এলাকায় খালপাড়ে ঋণদানকারী ওই
প্রতিষ্ঠানের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে
নূর মোহাম্মদ এবং বাহাদুর আগে
থেকে অবস্থান করছিল। রাত সাড়ে ৯টা থেকে
সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ওই গৃহবধূ এবং
তার স্বামীকে চারজন মিলে মারধর করে জখম
করে। রাত ১১টার দিকে বাহাদুর ওই
অফিস থেকে চলে যায়।
রাত
আড়াইটা থেকে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টা
পর্যন্ত রাসেলের সহযোগিতায় নূর মোহাম্মদ
এবং ছাগের মিলে তাকে পালাক্রমে
ধর্ষণ করে বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ
করেছেন ওই গৃহবধূ।
বাকলিয়া
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন জানান, নূর
মোহাম্মদের একটি মাল্টিপারপাস কোম্পানি
আছে। ওই কোম্পানি থেকে বাকলিয়ার দরিদ্র, ভাসমান
পর্যায়ের লোকজনকে ক্ষুদ্রঋণ
দেয়া হয়। অ্যাডভোকেট বাহাদুরেরও ওই
কোম্পানিতে বিনিয়োগ আছে।
তিনি
জানান, ‘নূর মোহাম্মদ ও বাহাদুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে
ধর্ষণের মামলা হয়েছে। আমরা বাহাদুর এবং নূর মোহাম্মদকে গ্রেফতার করেছি। বাকি
দুজনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’
এদিকে
মামলা দায়েরের পর ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে পুলিশ।
পুলিশ
জানায়, গ্রেফতারের পর বাহাদুর নিজেকে প্রথমে দক্ষিণ
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক বলে পরিচয় দেয়। নিজেকে
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য দাবি করে পুলিশের সঙ্গে বাহাদুর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে।
তবে
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি
মোছলেম উদ্দিন আহমেদ জানান, অ্যাডভোকেট
বাহাদুর কখনোই দক্ষিণ জেলা আওয়ামী
লীগের কোনো পদে ছিলেন না।
চট্টগ্রাম
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি
অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক জানান, বাহাদুর
আগে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে
সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম বারের
সদস্য এবং বর্তমানে তিনি আইন পেশায়
নিয়োজিত আছেন।
অনুসন্ধানে
জানা গেছে, অ্যাডভোকেট
বাহাদুরের পুরো নাম শাহাদাৎ কবির
বাহাদুর। তিনি আনোয়ারা উপজেলার পীরখাইন
গ্রামে মৃত মো. ইব্রাহিম কাশেমের ছেলে।
একসময় যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা
ছিলেন।