পাবনা
শহরে সাইকেল চুরির অভিযোগে
তুলসী চন্দ্র দাস (২৫)
নামের হরিজন সম্প্রদায়ের এক
যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা
হয়েছে। শনিবার
সন্ধ্যায় শহরের শালগাড়িয়া এলাকায়
নিয়ম ফুড লিমিটেড কারখানায়
এ ঘটনা ঘটে।
নিয়ম ফুডের মালিক মো.
ফরহাদ হোসেন জেলা ছাত্রলীগের
সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক
রফিকুল ইসলাম রুমনের চাচা
ও জেলা আওয়ামী লীগের
সাবেক কোষাধ্যক্ষ আবদুল হান্নানের ভাই। ঘটনার
প্রতিবাদে নিহতের স্বজন ও
হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন শহরের শালগাড়িয়া
এলাকায় সড়ক অবরোধ করে
কারখানার মালিক ফরহাদ, তাঁর
ভাই হান্নান ও ভাতিজা রুমনের
বাসভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর
করেন। এ
ঘটনায় শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে
পড়লে বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ
মোতায়েন করা হয়।
নিহত তুলসী শহরের অনন্ত
এলাকার হরিজন কলোনির শাওন
চন্দ্র দাসের ছেলে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (ওসি) আহসানুল হক
ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাবনা শহরের
শালগাড়িয়া মহল্লায় অবস্থিত নিয়ম ফুড লিমিটেডের
এক কর্মচারীর সাইকেল চুরির ঘটনাকে
কেন্দ্র করে আজ শনিবার
বিকেলে প্রতিষ্ঠানের লোকজন সেখানকার পরিচ্ছন্নতাকর্মী
তুলসী চন্দ্র দাসকে বেধড়ক
মারপিট করেন। মারধরের
একপর্যায়ে তুলসী গুরুতর অসুস্থ
হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন
তাঁকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে
নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক
মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে তুলসীর মৃত্যু সংবাদ
ছড়িয়ে পড়লে নিহতের স্বজন
ও হরিজন কলোনির বিক্ষুব্ধ
বাসিন্দারা জেনারেল হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ
করে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য
নিয়ম ফুডের মালিক ফরহাদ
হোসেন ও তাঁর ভাই
আবদুল হান্নান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা
রফিকুল ইসলাম রুমনকে দায়ী
করেন। তাঁরা
ওই তিনজনের বাসভবনে হামলা ও ব্যাপক
ভাঙচুর চালান। পরে
তাঁরা সারা শহরে বিক্ষোভ
প্রদর্শন করে জেলা প্রশাসক
ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়
ঘেরাও করেন। দোষীদের
গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির
আশ্বাসে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন
ঘরে ফেরেন। এ
ব্যাপারে নিয়ম ফুডের মালিক
ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের কাছে
পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার
করে বলেন, ‘তুলসী সাইকেল
চুরি করায় আমরা তাঁকে
জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি অসুস্থ
হয়ে পড়েন। পরে
হাসপাতালে মারা যান।’
তবে পাবনা সদর থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসানুল হক
জানিয়েছেন, নিহত তুলসীর শরীরে
আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পাবনার
পুলিশ সুপার মো. আলমগীর
কবীর বলেন, সাইকেল চুরির
ঘটনাকে কেন্দ্র করে পিটিয়ে হত্যার
ঘটনায় পুলিশ কাউকে ছাড়
দেবে না। এখন
হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন উত্তেজিত।
কাল রোববার তাঁদের কাছ
থেকে ঘটনা শুনে দোষীদের
বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হবে
এবং তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।