বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশে হঠাৎ জঙ্গি আতঙ্ক



ইরাক ও সিরিয়ার বিস্তৃত এলাকা নিয়ন্ত্রণকারী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এখন সারা বিশ্বে এক আতঙ্কের নাম। আইএসের থাবায় ক্ষতবিক্ষত ওই দুটি দেশ। স্মরণকালের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ এই জঙ্গি সংগঠনের ধাক্কায় জেরবার সৌদি আরব থেকে লিবিয়া, ব্রিটেন থেকে অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স থেকে জার্মানি।
দক্ষিণ এশিয়ায় আইএসের উপস্থিতির তেমন কোনো জোরালো প্রমাণ না পাওয়া গেলেও এখানে শক্ত ঘাঁটি রয়েছে আলকায়েদা ও তার সহযোগী তালেবানের। তবে আইএস এখন শক্ত ঘাঁটি গড়ার চেষ্টা করছে।
গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ জানিয়েছে যে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ২৫টিতে আইএসের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে।
এ রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার ৩ দিনের মাথায় বাংলাদেশ ও মালদ্বীপে আইএসের উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুরক্ষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশান কূটনৈতিক পাড়ায় সোমবার সন্ধ্যায় খুন হয়েছেন ইতালীয় ত্রাণকর্মী তাবেলা সিজার।
খুনের কয়েক ঘণ্টা পরই আইএস এর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, এদেশে আইএসের উপস্থিতির কোনো প্রমাণ এখনো মেলেনি।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে যে বাংলাদেশে পশ্চিমা নাগরিক ও পশ্চিমা স্বার্থে সম্ভাব্য জঙ্গি হামলার ‘নির্ভরযোগ্য তথ্য’ রয়েছে তাদের কাছে।
এদিকে মঙ্গলবার বোমা হামলার হুমকিতে মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও তাজ হোটেলে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনকে বহনকারী একটি স্পিডবোটে রহস্যজনক বিস্ফোরণ ঘটে। এতে তিনি অক্ষত থাকলেও আহত হন তার স্ত্রীসহ দুজন।
চরম বিতর্কিত নির্বাচনে জয়ী ইয়ামিন এটাকে ‘ডাইনির কুহক’ বলে আখ্যায়িত করে বিরোধী দলের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
তবে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে মঙ্গলবার বলা হয়, এ ঘটনার পেছনে আইএসের সংশ্লিষ্টতা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
গত ১ সেপ্টেম্বর ইউটিউবে প্রকাশিত এক ভিডিওতে তিন মুখোশধারী যুবক বলেছেন, মালদ্বীপের রক্ষণশীল নেতা শেখ ইমরানকে মুক্তি এবং নতুন সন্ত্রাস বিরোধী আইন প্রত্যাহার না করা হলে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আদিবকে হত্যা করা হবে।
ওই ভিডিওতে আইএসের লোগো রয়েছে এবং এটি আইএসের ভিডিও বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
সম্প্রতি দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে ধর্মীয় চরমপন্থার উত্থান ঘটেছে। গত বছর সিরিয়ায় যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা গেছে দেশটির পাঁচ যুবক।
ভাইস প্রেসিডেন্ট আদিব জানান, মালদ্বীপের ২০০ যুবক সিরিয়ায় পাড়ি দিয়েছে।
এদিকে আফগানিস্তানে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব নিয়ে তালেবানরা ঝিমিয়ে পড়েছে বলে মনে করা হলেও সোমবার তারা দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর কুন্দুজ দখল করে নিয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এটাকে তালেবানের সবচেয়ে বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।