রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

২০১৭ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে ইন্টারনেট : শেখ হাসিনা



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৭ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে দ্রুতগতির ইন্টারনেট। কারণ প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে।
শনিবার গণভবনে উপজেলা ডিজিটাল মেলা ও ইন্টারনেট সপ্তাহ উদ্বোধন করে দেয়া এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা ২০০ প্রকারের সেবা অনলাইনে দিচ্ছি। কোরবানীর গরু থেকে শুরু করে মোটরসাইকেল সবই অনলাইনে কেনা যায়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমাদের কৃষকরা তথ্য সংগ্রহ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সিস্টেম তো আমি বুঝি না। কারণ আমি সাইন্সের ছাত্রী ছিলাম না। আমি ছিলাম বাংলার ছাত্রী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি বাংলা সাহিত্যে ডিগ্রি অর্জন করেছি। আমি আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পর্কে জেনেছি।
ডিজিটাল এ প্রযুক্তি ব্যবহারে আইন হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাতে প্রযুক্তির অপব্যবহার না হয় সেজন্য আইন হচ্ছে। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করে আমাদের সমাজের উন্নয়ন করতে হবে। এটার ব্যবহার যেন আমাদেরকে ক্ষতির দিকে না নেয়।
তথ্যপ্রযুক্তির সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরদের প্রতি ইন্টারনেট রেট আরও কমিয়ে আনার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন,বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ইন্টারনেটের দাম জনগণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে ইন্টারনেটের দাম কমানো হয়েছে। মোবাইল অপারেটরগুলোকে আহ্বান জানাই তারাও যেন গ্রাহক পর্যায়ে দাম কমিয়ে আনতে কার্যকর ভূমিকা নেয়।
তার সরকারই প্রথম ইন্টারনেট সেবাকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা দেশকে উন্নতির পথে নিয়ে যাবো। তবে একটি জিনিসকে খেয়াল রাখতে হবে, এর অপব্যবহারের মাধ্যমে যেন দেশে সামাজিক অবক্ষয় না হয়। ইন্টারনেটের কোনো রকম অপব্যবহার যেন না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
উল্লেখ্য, সাধারণ মানুষকে আরো বেশি করে অনলাইন সেবার আওতায় আনতে এবং তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটভিত্তিক উদ্যোক্তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিতকল্পে আয়োজন করা হয় এই ‘বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক’ এর।
আয়োজনে রয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), গ্রামীণফোন এবং সরকারের আইসিটি বিভাগ।
প্রধানমন্ত্রী বিকেলে উদ্বোধন করলেও রাজধানীর বনানী সোসাইটি মাঠে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত উৎসবের মূল আয়োজনের দ্বার উন্মুক্ত করা হয় দুপুর দুইটায়।
ঢাকা ছাড়াও দুটি বিভাগীয় শহরে প্রদর্শনীসহ দেশের ৪৮৭টি উপজেলায় একযোগে শুরু হওয়া এই ইন্টারনেট উইক চলবে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
এ উপলক্ষে রাজধানীর বনানী সোসাইটি মাঠে আয়োজিত কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে থাকছে নানা আয়োজন। শনিবার রাত ৮টায় বনানী মাঠে থাকবে ‘মিট দ্য ইয়ুথ’ অনুষ্ঠান। সেখানে তরুণদের ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এবারের ইন্টারনেট উইকে অংশ নিচ্ছে ই-কমার্স, ওয়েবপোর্টাল, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনসহ সারাদেশের স্থানীয় মোবাইলভিত্তিক বিভিন্ন উদ্যোগ। সারা সপ্তাহজুড়ে এসব উদ্যোগের প্রচার ও প্রদর্শন চলবে। উৎসবে দর্শনার্থীরা এসব সেবা গ্রহণের প্রক্রিয়া সরাসরি দেখতে ও জানতে পারবেন। এছাড়া ইন্টারনেট সপ্তাহ উপলক্ষে দেশের অর্ধশত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মশালা, সেমিনার আয়োজনের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমে সাতটি পলিসি বৈঠকের আয়োজন করা হবে।