বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৫

‘মুহাম্মদ (স) মুভি ইসলাম সম্পর্কে পাশ্চাত্যের বিভ্রান্তি দূর করবে’

ee895aabe35bc4572a625f0d8174fcf7_XL
রানে নির্মিত ‘মুহাম্মদ (স)’ মুভিটি পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পাশ্চাত্যের ভ্রান্ত ধারণা দূর করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন খ্যাতনামা ইরানি চলচ্চিত্র পরিচালক মাজিদ মাজিদি।
প্রায় ৪ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রটি আগামীকাল ইরানের ১৪৩টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। ছবিটি আজ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কারিগরী সমস্যার কারণে তা একদিন পিছিয়ে দেয়া হয়। ইরানে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে ১৭১ মিনিটির এ ছায়াছবি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনখণ্ডের এ ছায়াছবির প্রথম খণ্ডে মহানবীর (স) বাল্যের জীবনালেখ্য তুলে ধরা হয়েছে।
তেহরানে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে ‘মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ (স)’ এর পরিচালক ৫৬ বছর বয়সী মাজিদ মাজিদি বলেন, পশ্চিমা বিশ্বে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পবিত্র দ্বীন ইসলামের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
সাক্ষাৎকারে মুসলিম বিশ্বে মহানবীর জীবন আলেখ্যের ভিত্তিতে নির্মিত ছায়াছবির চাহিদার কথাও তুলে ধরেন তিনি। মাজিদ মাজিদি বলেন, সৌদি আরবের মতো হাতেগোণা কয়েকটি দেশে এ চলচ্চিত্র নিয়ে সমস্যা থাকতেই পারে। কিন্তু তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশই এ ছবির বিষয়ে প্রচণ্ড আগ্রহ দেখিয়েছে।
মহানবীর জীবনীভিত্তিক প্রথম ছায়াছবি নির্মাণ করেছিলেন সিরিয়-আমেরিকান চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা আক্কাদ। ওই ছায়াছবির নাম  ‘দ্য ম্যাসেজ’। ১৯৭৬ সালে তা মুক্তি পাওয়ার পর মুসলমান বিশ্বের কোনো কোনো মহল তার কঠোর সমালোচনা করেছিল। দ্বীনের নবীর জীবনীভিত্তিক ছবি নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিশ্বের কোনো কোনো মুসলমানের উদ্বেগের বিষয়টি অনুধাবন করে মাজিদ মাজিদি বলেন, ছবিতে বিকল্পভাবে মহান নবীকে উপস্থাপন করা হয়েছে। চলচ্চিত্রে মহানবী ক্যামেরার দিকে পেছন ফিরে ছিলেন। তাঁর অবয়ব দেখা গেছে। কিন্তু তার চেহারা মোবারক দেখানো হয়নি।
হাসিমুখে বিশ্ববরেণ্য এ চিত্রনির্মাতা বলেন, ‘পুরো ছবিতে নায়কের দুর্দান্ত উপস্থিতি রয়েছে কিন্তু তাঁর চেহারা দেখানো হয় নি- সত্যিই এটা একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ ছিল।‘  এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশেষ পদ্ধতির আশ্রয় নেন মাজিদি এবং তিন তিনবার অস্কার বিজয়ী ইতালির সিনেমাটোগ্রাফার ভিত্তেরিও স্তোরারো।
মাজিদি বলেন, ছায়াছবিতে মহানবীকে তুলে ধরার জন্য বিশেষভাবে তৈরি স্টেডিক্যাম ব্যবহার করা হয়। চলচ্চিত্রটির যে দৃশ্যেই রাসূল (স)-কে দেখানো হয়েছে সেখানেই দৃশ্যটি নবীর দৃষ্টিভঙ্গি অর্থাৎ চলচ্চিত্রের ভাষায় ক্যারেক্টারস পয়েন্ট অব ভিউ বা পিওভি থেকে দেখানো হয়েছে। এমনকি নবীজির শৈশবের দৃশ্যও এ ভাবে চিত্রায়িত হয়েছে বলে জানান তিনি।
মাজিদি বলেন, চলচ্চিত্রটিতে সবাই মুহাম্মদ (স)কে দেখার জন্য উদগ্রীব থাকবে কিন্তু কেউ তাঁর পবিত্র মুখমন্ডল দেখতে পাবেন না। তাঁর অবয়ব দেখা যাবে বা ক্যামেরার দিকে পেছন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন- এমন দৃশ্যই কেবল দেখা যাবে।
এ ছাড়া, মুহাম্মদ (স) বাকি দুই খণ্ড নির্মাণের ক্ষেত্রে কি সমস্যায় পড়তে হবে তাও তুলে ধরেন তিনি। মাজিদ মাজিদি বলেন, নবুয়ত লাভের পর মহানবীর সংলাপ নিয়েও বেশ সমস্যা দেখা দেবে। অবশ্য এ সমস্যা উৎরানো যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি ।